Translate

বৃহস্পতিবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৭

সুখ

         



            আমাদের বাড়ি কোলকাতার কাছে শহরতলী বলা যার। দৈনন্দিন কাজের সুবিধার জন্য সব বাড়ির মতো আমাদের বাড়িতেও একটি কাজের বৌ আছে নাম তার মায়া।রুক্ষ মেজাজ বিদ্যুতের গতিতে  আসে কাজকর্ম  সেরে ঝড়ের বেগে চলে যায়৷মায়া কে দেখতে রুক্ষ নয়৷গায়ের রং ফর্সা দোহারা চেহারা মুখশ্রীও ভালো৷একদিন জিজ্ঞাসা করলাম হ্যাগো মায়াদি তোমার বাড়ি কোথায়৷ও বলল  "কেন এই তো তোমাদের পাড়ায় ঐ রাস্তার মোড়ের বস্তিতেই তো থাকি৷আমাদের পাড়ার রাস্তাটা যে বড় রাস্তায় মিশেছে তার পাশে কত গুলো ছোট ছোট বাড়ি আছে৷মাটির নয় পাকা বাড়ি৷মায়াদি ওখানেই থাকে৷"আমি বললাম নারে বাবা বিয়ের আগে মানে তোমার বাপের বাড়ি কোথায় ৷ঐ দিন মায়াদি বেশ relax moodএ বলল "বিয়ের আগে৷আমি পাণিহাটিতে থাকতাম৷আমরা চার বোন তিন ভাই৷বাবা আমাকে খুব ভালোবাসত৷মায়াদি আমায় ছোড়দি বলে ডাকে বলল জানো ছোড়দি আমি ছোটবেলায় বেজায় দুষ্টু ছিলাম৷লোকের বাড়ির পেয়ারা গাছে উঠে পেয়ারা চুরি করতাম দুপুর বেলা আম চুরি করে খেতাম৷আমরা তো খুব গরীব ছিলাম শীতকালে তাই শুধু বাবার জন্য নলেন গুড় আসত ওটা কেউ খেত না আমি গুড় চুরি করে খেয়ে ঐ মাটির কলসিতে জল ঢেলে রাখতাম৷"সেদিন ঝড়ের বেগের মায়ার গতি থেমে গিয়েছিল কিছুক্ষণের জন্য ও স্থির জলাশয় হয়ে গিয়েছিল পিছিয়ে যাওয়া দিনগুলো যেন মায়ার মনে হঠাৎ করে সজীব হয়ে উঠেছিল৷সেদিন খিলখিলিয়ে খুব হাসল তারপর বলল "নাগো তোমার সাথে গল্প করতে বসলে আমার কাজে দেরি হয়ে যাবে৷"বেশ কিছুদিন পর বর্ষার সকাল আমিও একটু অলসতায় দেরি করে ঘুম থেকে উঠেছি৷জানলা দিয়ে তাকিয়ে বৃষ্টি ভেজা নিম গাছ আর ঐ ভেজা গাছের ডালে দুটো ভেজা কাকের দুরবস্থা দেখছিলাম৷মায়া এসে ধপাস করে মেঝেতে বসে বলল "কি বৃষ্টি গো ছোড়দি এমন বৃষ্টিতে কাজ করতে যাওয়া কি ঝামেলা বলত৷"আমি বললাম "তোমার বিয়ের আগের গল্প বল না মায়াদি ৷তোমার বিয়ে কি করে হল। "ও একটু লজ্জা পেয়ে বলল "আমার বরের মাসির বাড়ি সোধ্পুর ও ওখানে যেত আর আমারও এক আত্মীয় সোধ্পুরের তাই ঐ খানেই আমাদের দেখা তারপর ভালোবাসা করে বিয়ে করেছি৷"মায়া বাঙালি কিন্তু ওর বর রামবোলিয়া উত্তরপপ্রদেশের লোক৷এখন অবশ্য এই বাংলারই বাসিন্দা হয়ে গেছে৷ মায়া বলে ওর বর হিন্দুস্থানী আমি বললাম "হ্যাগো আমরা সবাই তো হিন্দুস্থানী৷বলে সে কি গো ছোড়দি আমরা তো বাঙালী ওরা হিন্দিতে কথা বলে তাই হিন্দুস্থানী৷"আমি বলাম "নাগো আমাদের দেশ হিন্দুস্থান আর আমরা এই দেশের নাগরিক তাই আমরা হিন্দুস্থানী৷হিন্দি হল আমাদের  রাষ্ট্রীয় ভাষা৷"মায়াদি তো ভ্রূ উচিয়ে বলল "অতো আমি জানিনা আমার বর হিন্দুস্থানী ব্যস৷"যাক গিয়ে আমি আর তর্কে না গিয়ে আবার ওর পুরনো দিনের কথায় ফিরে গেলাম৷মায়া এবার নিজেই বলতে শুরু করল৷"খুব গরিব বাড়ির মেয়েগো আমি৷এত গুলো ভাইবোন কিন্তু খুব সুখেই ছিলাম৷চিন্তা ছিলনা দায়িত্ব ছিলনা৷পাড়ার মেয়ে গুলোর সাথে আড্ডা দিতাম ঘুরে বেরাতাম৷একবার ঝোঁকের মাথায় পায়ে হেঁটে গঙ্গায় গিয়ে চানও করেছি৷তারপর শিবরাত্রি তে রাত জাগা ভালোই ছিলাম জানো৷তারপর একদিন আমার বরের সঙ্গে পরিচয় হল প্রেম করলাম তারপর বিয়ে হয়ে গেল৷"মায়ার বরকে দেখতে বেশ ভালো লম্বা গায়ের রংও ফর্সা শরীরে মেদ নেই এখন অবশ্য যথেষ্ট বয়েস হয়েছে কিন্তু আমার মনে হয় ওর বর বরাবরই বয়স্ক৷পেশায় ফল বিক্রেতা মাঝে মধ্যে সন্ধেবেলায় বাস স্ট্যান্ডের ধারে ঘুগনী বেচে ভুট্টাও বিক্রি করে তাও কদিন যখন ওর মর্জি হয় তখন৷বিয়ের প্রায় কয়েক বছর পর থেকে গরিব বাড়ির মেয়ে মায়াকে ওর দুঃস্থ শাশুড়ি লোকের  বাড়িতে কাজে লাগিয়ে দেয়৷পুরো সংসারের দায়ভার যেনও ওরই ঐ যে ও প্রেম করে বিয়ে করেছে তাই৷মায়ার তিন ছেলে আর স্বামী তাদের সব খরচ ও একাই লোকের বাড়ি কাজ করে মেটায়৷মায়ার বরের যা রোজগার তাতে ভুট্টা খাওয়া যায় সংসার চালানো যায় না৷মায়া সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লোকের বাড়ি কাজ করে তারপর সংসার সামলায় কিন্তু কখনও অভিযোগ করে না৷তিন ছেলেই এখন রোজগার করছে তারাও বিয়ে থাওয়া করে সংসার করছে মায়াকে কেউই দেখে না৷মায়া তাতেও কখনও অভিযোগ করে না৷ওর বরের প্রতিও  মায়ার কোনও নালিশ নেই৷মায়া যে সত্যিকারে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল৷ভালোবাসা ন্যায় অন্যায় উচিৎ অনুচিত এই গুলো বিচার করে না৷কিন্তু এই গুলো বিচার করাও দরকার৷
                মায়া কে দেখি আর আমার আর একজনের কথা বার বার স্মৃতি থেকে উঠে আসে৷আজ থেকে প্রায় ১৫ -১৬ বছর আগে আমরা থাকতাম পুরুলীয়া জেলার এক শহরে৷ মালভূমি এলাকা আর মানভূমি লোকজন ওখানকার কথা বলার ধরণ ওদের গ্রামের লোকেদের চেহারা এখানকার মানে কলকাতার লোকেদের থেকে একটু আলাদা৷তখন আমাদের বাড়িতে কাজ করত এক সাওতালী মহিলা ৷নাম ছিল বিনোদিনী৷কালো কুচকুচে পাষানের মতো চেহারা চকচকে ত্বক তবে লম্বা নয়৷সেও এক ঝড় তেমনি উচ্চস্বরে কথা বলত৷তীব্র বেগে এসে সব কাজ সেরে আবার আরেক বাড়ি৷ওরও একটা অতীত ছিল৷বিনোদিনী মোটামুটি স্বচ্ছল পরিবারের মেয়ে ছিল৷সোনাদানা জিনিস পত্র দিয়ে বিনোদিনীর বাবা বিনদিনী কে বিয়ে দিয়েছিল৷বিয়ের পর একটা মেয়ে হয়৷বিনদিনী বেশ ভালোই ছিল৷কিন্তু হঠাৎ একদিন বিনদিনীর স্বামী আরেকটা বিয়ে করে আনে৷বিনদিনী প্রতিবাদ করলে সে জানায় "তুই চলে যা এই লতুন বৌ ইখানেই থাকবেক আমার সইঙ্গে"৷এই অন্যয় আব্দার বিনদিনী সহ্য করতে পারেনি৷মেয়েকে রেখে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিল৷আমার এখনও মনে পরে বিনোদিনীর কথা৷আমি তখন অনেকটাই ছোট স্কুলে পড়ি৷বিনোদিনী কে আমি আর আমার দিদি বিনোদিনী মাসি ডাকতাম৷বিনোদিনী মাসি আমাদের রাজকুমারি বলত৷ও মন থেকে খুব আধুনিক ছিল৷আমরা জোরে জোরে পড়া মুখস্থ করলে ও কাজ থামিয়ে শুনত৷বলত "তোরা অনেক বড় হবি তোরা নিজের পায়ে দাঁড়াবি৷"মা র কাছে ও গল্প করেছিল কি ভাবে ও গ্রাম থেকে পুরুলীয়ার এই রেলের শহরে এল৷যে দিন ও ঘর ছেড়েছিল সেদিনটা বিনদিনী মাসি rail station এ কাটিয়ে ছিল সারাটা দিন না খাওয়া শুধু মনের মধ্যে রাগ,ঘেন্না,অসহয়তা,দুশ্চিন্তা এই সব অনুভূতি গুলো সমুদ্রের ঢেউ এর মত বার বার আছড়ে পরছিল৷কি করব কোথায় যাব  "সরা জীবন এই ইস্টেশনে বসেই থাইব কিন্তু ঐ ঘর যাবক নাই যেখানে আমার মরদ আরেকটা বিয়া করছে৷"তারপর একজন সজ্জন ব্যক্তি বিনদিনী মাসিকে দেখে  ও তার বাড়িতে নিয়ে যায়৷তার বাড়ির কাজকর্ম কর্ম করে বিনদিনী৷জায়গাটি যেহেতু railway junction তাই ওখানে প্রচুর রেল কোয়ার্টারের আধিক্য ছিল৷তাই অন্য বাড়ি গুলোতে কাজ পেতে বিনদিনীর কোনও অসুবিধে হয়নি৷লোকের বাড়িতে কাজ করে নিজের একটা বাড়ি ভাড়া করে সেখানেই থাকতে শুরু করে৷একজন বাবু আবার ব্যাঙ্কে চাকরি করতেন তিনি বিনদিনী কে ব্যঙ্কের ঝাড়পোছ আর চা খাওয়ানোর কাজে লাগিয়ে দেন৷তার সুবাদেই ব্যঙ্কের পাশে একটা ছোট্ট ঘরও ভাড়া পায় যাতে দরকার পরলে বিনদিনী কে কাজের সুবিধার জন্য তলব করা যায়৷এই ভাবেই চলছিল বেশ৷তারপর একদিন বিনোদিনী মাসি ওর মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে তখন বুঝতে পারে সময় কতটা দ্রুতবেগে এগিয়ে গেছে৷ওর ছোট্ট মেয়ে বড় হয়ে গেছে তার বিয়ে হয়ে গেছে আবার সে জন্ম দিয়েছে দুই যমজ কন্যা সন্তান৷মেয়ে আর নাতনীদের দেখে বিনদিনী মাসির চোখ ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল৷ছোট্ট মেয়েটার শৈশব থেকে যৌবনের পথ যাত্রার সাক্ষী হতে পারল না বিনদিনী৷মেয়েও সেই সংসারের জাঁতাকলে অবরুদ্ধ৷মার কাছে আব্দার করল৷ "মা আমার যমজ দুই মিয়া গুলাকে আমি একা সামাল দিতে লাইড়ছি৷তুই একটাকে লিয়ে যা৷"বিনদিনী তো আনন্দে উচ্ছল৷তবে কি আমার মেয়ে আমায় ওর ছোটবেলাটা উপভোগ করার সুযোগ করে দিল৷বিনদিনী একটি নাতনীকে নিয়ে নিজ বাসস্থানে ফিরল৷বিনোদিনী মাসির নাতনী দুটির নাম গুলো বেশ ছিল,জল্পনা আর কল্পনা৷কল্পনা ওর দিদার সঙ্গে থাকতে শুরু করল৷মোটাসোটা কালো চেহারা মাথা ভর্তি ঝাকড়া চুল৷ঐ কল্পনা হল আমার সঙ্গী৷নাতনীকে পেয়ে বিনোদিনী নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করল৷ও একা মানুষ তাই লোকের বাড়ি কাজ করে বেশ কিছু টাকা সঞ্চয় করে ছিল৷তারপর খাওয়া খরচা প্রায় ছিলই না৷সাত বাড়ি কাজ করত প্রত্যেকেই জলখাবার,দুপুরে ভাত তরকারি দিয়েই দিত৷রাত্রি বেলা এক ব্যাঙ্কের বাবুর বাড়িতে রুটি করত সেখানেই ও খেত৷তাই বিনদিনীর সঞ্চয় ভালই ছিল৷ও সুদের ব্যাবসা শুরু করল৷আশে পাশের কামিনদের সুদে টাকা ধার দিত৷তারপর দেখি হঠাৎ ছাগলের ব্যাবসা শুরু করল৷ব্যবসায় মোটামুটি লাভও হয়েছিল৷সবাই বলত বিনোদিনী মাসি এখন ব্যাঙ্কে টাকা জমা রাখার খাতা খুলেছে৷নাতনীটাও শহরে এসে আদর যত্ন পেয়ে দিব্যি ছিল৷কিন্তু একদিন হঠাৎ বিনদিনীর মেয়ের আগমণ হয়৷সে বলে" না মা আমি কল্পনা কে লিয়ে যাব৷"বিনদিনীর বুকে যেন কেউ আঘাত হানে খুব কান্না পায় কিন্তু কিছু বলে না কল্পনাকে পাঠিয়ে দেয়৷পরে জানতে পারে ওর মেয়ে দুই নাতনীকেই কাজে লাগিয়ে দিয়েছে৷ওদের গ্রামে কোনও bridge এর constructionহচ্ছিল৷সেখানে ভালো টাকা তাই দুই মেয়েই যদি খাটে সংসারে আয় ভালো হবে৷বিনদিনী এই কথা জেনে অনেক প্রতিবাদ করে মেয়ের সাথে ঝগড়া করে কিন্তু লাভ হয় না৷মেয়ে জানায় "আমি যখন ছোট ছিলাম তখন তুই তো ছিলিনা এখন আমি আমার মিয়া গুলাকে যেমন রাখি তুয়ার তাতে কি হইচ্ছে৷"বিনদিনী নির্বাক হয়ে যায়৷ফিরে আসে ওর ছোট্ট ভাড়া বাড়িতে৷ব্যাঙ্কে বাবুদের কাজে লেগে পরে৷এখন আর লোকের বাড়ির খাবার খায় না৷কল্পনা আসার পর ছোট্ট ছোট্ট হাড়ি কড়া কিনে নিজেই ঘরে রান্না করত৷এখন নিজেই নিজের জন্য রান্না করে খায়৷পুজোয় সাড়ী কেনে একা একাই পুজোয় ঠাকুর দেখে বেড়ায়৷
ওর logicহল এটাই যখন আমি আমার গতর খাটিয়ে পয়সা রোজগার করছি তবে জীবনের সব সুখ সুবিধা গুলো থেকে নিজেকে বঞ্চিত করব কিসের জন্য৷না অন্যায় করব না সইব৷জীবনের প্রতিটা মূহুর্ত,প্রত্যেকটা দিন,সকল ঋতু সমান ভাবে উপভোগ করব৷আমি আমার মতো বাঁচব আমি নিজের জন্য বাঁচব৷আর অন্য দিকে মায়া সেও সুখী সেও পুজোয়  নতুন সাড়ী কেনে তবে ছেলের বৌদের জন্য পুজোয় ঠাকুর দেখতে যায় না কারণ আর শরীর দেয় না৷কিন্তু তবু সে তার সংসারের সদস্যদের জন্য সুখী৷সদস্যরা তাকে নাই দেখুক বা ভালো নাই বাসুক৷এ  যেন একই নদীর দুই রূপ একজন খরস্রতা অপরজন শান্ত সলিলা৷একজন স্বাবলম্বী এবং স্বাধীণ স্বতন্ত্র গুল্ম, আর অপরজন স্বাবলম্বী  কিন্তু নির্ভরশীল ঠিক যেন লতা৷

মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৭

মাছের ঝোল

মাছের ঝোল শুনলেই জ্বিভে জল আসে সব বাঙালীরই। মাছ বিশেষতঃ মাছের ঝোল দিয়ে ভারতবাসীদের মধ্যে বাঙালিকে চেনা বড়ই সহজ হয়। এই বাঙালীর identification এর প্রতীক মাছের ঝোলের সঙ্গে যদি জীবনের তুলনা করা যার তবে বেশ হয় কিন্তু। একজন মানুষের জীবন যদি কিছু উপাদান দিয়ে তৈরী হয় যেমন-জন্ম, শিখ্খা,জীবিকা,সখ,সাফল্য এবং সম্পর্ক।হ্যাঁ, সম্পর্ক বড় জটিল জিনিস মাছের ঝোল বড়ই সরল।কিন্তু সম্পর্কটা সরল করতে পারলে তো জীবনের অনেক জটিল কঠিন  অঙ্কের সমাধান হয়ে যায়। এই ধরুন মাছের ঝোলে leading role এ আছে মাছ আর ঝোল হল আধার মাছের সুস্বাদু রস ঝোলে এসে মিললে তা পুষ্টিকর  ও সুস্বাদু  হয়।মাছ বেশী সিদ্ধ  হলে স্বাদ থাকে না আবার মাছ ভাজা বেশী হলেও ঝোল  সুস্বাদু হয় না।তাই balance মানে সামঞ্জস্য আনা বিশেষ দরকার।তারপর নুন ঝাল এরা supporting role এ আছেই মানুষের জীবনের সবথেকে  important ব্যক্তির সাথে সামঞ্জস্য রেখে চলতে হলে কিছু ছোট্ট ছোট্ট tips মানলেই হয়ত সম্পর্ক টা সরল করা যাবে।কোনও কিছু অতিরিক্ত হলে যেমন তা নষ্ট হয়, নুন, ঝাল বা সিদ্ধ বেশী হলে মাছের ঝোল সুস্বাদু থাকে না তেমনি সম্পর্কের মধ্যে রাগ জেদ ego বেশী পরিমাণ ঢুকে পরলে সম্পর্কও নষ্ট।তাই ভালোবাসা যেমন দরকার ঠিক তেমনই  সামঞ্জস্যও আবশ্যিক । ভালোবাসাও যদি অতিরিক্ত হয় তাও আবার বেশীর ভাগ সময় মানুষের চরিত্র গঠনে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় বা চরিত্র নষ্ট হয়। যেমন মায়ের অতিরিক্ত স্নেহের বসে পুত্রের সর্বনাশ  হয়েই থাকে।ঠিক/ভুল নির্ণয়ের খ্মতা লোপ পায়। তাই পুনরায় ঐ একই কথা সামঞ্জস্য বড়ই দরকার সে মাছের ঝোলে নুনের সামঞ্জস্য বা মানুষের জীবনে সকল অনুভূতির সামঞ্জস্য।

রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৭

ইঢ্ছা

আমাদের সকলের ইচ্ছা আছে। ছোটো  ইচ্ছা বড় ইচ্ছা নানান ইচ্ছা।শিশুর জন্ম গ্রহণ করার পর স্তন পানের ইচ্ছা জন্মের পর এটা হল প্রথম ইচ্ছা বা যাএার প্রথম সিঁড়ি। তারপরে শৈশব কালে নানা খেলনা পাওয়ার ইচ্ছা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইচ্ছার আয়তনও বাড়তে থাকে। ইচ্ছা টা দরকারও বটে তবে এই ইচ্ছা গুলো পুরণের চাইতে ত্যাগ  করে মহিলারাই। ধরা যাক বাড়িতে বড় মাছ এল ছোট্ট মাছের পিস টা কিন্তু মায়ের পাতেই পড়ে। মুরগীর লেগ পিস,  ইলিশ মাছের পেটি  বা ধরুন  বোয়াল মাছের লেজা কোনটাই মায়ের পাতে দেখা যায় না বা দেখতে পাওয়ার নজির বিরল। কিন্তু পরিবারের সকলের রসনা তৃপ্তির জন্য পরিশ্রম করে রান্না করার পর কি কখনও ইচ্ছা হায়না যে আজ সেরা টুকরোটা খেলে কেমন লাগত। সেকাল থেকে একাল অবধি কিছু কিছু জিনিস অপরিবর্তিতই রইল তবে দৈনন্দিন জীবনে আমরা সকলেই অল্পবিস্তর ইচ্ছার মুখ চেপে ধরি। যেমন অফিসের বসের  উপেক্ষা বা  অবজ্ঞা সুর শুনে অনেকেরই ইচ্ছা হয় দি বেটার গালে কশিয়ে বা দি resignation টা ছুড়ে কিন্তু হয়না হঠাৎ বহু আকাঙ্ক্ষিত মনের আশা পুরণ হলে ইচ্ছা হয় অনেক উঁচু বিল্ডিং এর ছাদে উঠে প্রাণ খুলে চিৎকার  করি কিন্তু হয় না। হৃদয় বিদারী আঘাত পেয়ে ইচ্ছা হয় চিৎকার করে কাঁদি কিন্তু পারি না। সমাজের অঅনেক নোংরামি দেখে ইচ্ছা হয় এই দুই হাতে চাবকে সোজা করি ঐ নৃশংস ক্রীমিনাল গুলোকে যারা নারী  শরীর উপভোগ করা কে জন্মসিদ্ধ অধিকার মনে করে।এই ইচ্ছাটা বড়ই শক্ত কিন্তু তৃপ্তি দায়ক তাও পারিনা। এই সব ইচ্ছা রোজ আমাদের মনে কোথায় উকিঁ ঝুঁকি মারে আর আমরা ইশারা করে ইচ্ছা র মুখে আঙুল দিতে বলি। কি করা যায় সমাজে যা ইচ্ছা তাই করার অধিকার কিছু কিছু জন্তু রূপীমানব বা  মানব রূপী জন্তুরই আছে। 

শনিবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৭

স্বাদ

                              স্বাদ
এই শব্দটি শুনলে একটা অনুভূতি তো সকলের জাগে তা হল খাদ্য বা খাওয়ার জিনিস। নানা খাদ্য সামগ্রী প্রকৃতি আমাদের  চারপাশে ছড়িতে  রেখেছে আর আমরা তার সঠিক প্রয়োগ করি।তার জন্য দরকার একটি পদ্ধতি, তা হল রান্না যা পুরোপুরি মনুষ্য নিয়ন্ত্রিত।আবার কিছু কিছু শব্দ যেন নিজেই বিশেষ স্বাদ  বহন করে যেমন লঙ্কা ঝাল, নীম তেতো, তেঁতুল টক, লবণ নোনতা,চিনি মিষ্টি। শব্দ ধ্বনি কানে  পৌছালেই স্বাদঅনুভুত হয় । এই সকল স্বাদ সকলেই উপভোগ করেন।ধনী, দরিদ্র,বেকার,অসুস্থ সকলেই । কিন্তু এর বাইরে একটি স্বাদ আছে। তা হল সাফল্য, জয় এর স্বাদ। আমরা ক জন এই স্বাদ অনুভব করি। আমাদের দেশের কটা ছেলে বা কটা মেয়ে এই স্বাদ পায় । প্রকৃতির থেকে প্রাপ্ত উপকরণ আর মনুষ্য সৃষ্টি পদ্ধতি রান্না বা রন্ধন এর মাধ্যমে আমরা খাদ্য সম্পর্কিত সব স্বাদ অনুভব করি। কিন্তু ছোট্ট বেলা থেকে বড় বড় স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে ওঠার পর আমার কি সেই সাফল্যের স্বাদ পাই। প্রত্কটি শিশু যখন ধীরে  ধীরে পরিণত হয় তখন তার স্বপ্ন ও যদি পূর্ণতা পেত তবে? এক সাথে একই স্কুলে পড়ে বড় হয়ে ওঠা এক ঝাঁক ছেলেমেয়ের মধ্যে কজন পায় সাফল্যের স্বাদ বাকিরা ছিটকে যায় সাফল্য  থেকে শত ক্রোশ দুরে আর স্বাদ,স্বাদ থাকে না জীবণে,ওটা খানিকটা বিস্বাদ হয়ে যায়।