Translate

রবিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৮

কনক *


#কনক
#রচনায়#প্রিয়ম্বদাপ্রিয়া
        অনু চুপি চুপি এসে কনকের পেছন থেকে ভৌ শব্দ করে হালকা ধাক্কা দিতেই কনক চেঁচিয়ে  উঠল। অনু হো হো করে হেসে ওঠে ..."কি ভীতু রে তুই? "কনক ওর পিঠে চাটি মেরে বলে ..."আমিও ঐরকম পেছন থেকে হঠাৎ করে ভয় দেখাব তখন বুঝবি।"অনু ওর পাশে এসে বসল বলল ..."আচ্ছা সে নয় দেখা যাবে। এখন বল তো সুভাষদার কি খবর? দিল্লিতে গিয়ে সব ভুলে গেল বুঝি?"
..."আরে ও খুব ব্যস্ত থাকে। ইদানীং ফোনে কমই কথা হয়।এম.বি.এ করা যথেষ্ট টাফ্। "
..."যাই বল কনক সুভাষদা হঠাৎ করে এম.বি.এ করার ডিসিশনটা নিল বিয়েটা করে গেলেই পারত।"অনুর কথায় একটু বিরক্ত হয়ে কনক বলল ..."বিয়ের ঢের সময় আছে। এখন ও ভালো করে সেটল হোক আমিও তো বি.এডএ ভর্তি হব। "অনু হাসল আলগা ভাবে। 
        কনকদের বন্ধু মহলে সবাই জানে সুভাষ আর কনক চার বছর ধরে  রিলেশনে আছে। কনকের তো এখনও মনে আছে সরস্বতী পুজোয় হলুদ শাড়ি পরে যখন কনক কলেজের পুজোয় পুষ্পাঞ্জলি দিতে গিয়েছিল সেই প্রথম ওকে দেখেই সুভাষ প্রেমে পড়ে গিয়েছিল। কনকের পাশে এসে দাঁড়াতেই মেরুন পঞ্জাবী পরা ছেলেটাকে দেখে একটু লজ্জা লেগেছিল কনকের। এক সঙ্গে অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছে ওরা দুজনে। সুভাষকে দেখে বন্ধুরা যখন কনকের লেগ পুল করত ..."ঐ দেখ তোর বর আসছে। "খুব হাসি পেত।  মনে মনে উপভোগ করত ঐ দুষ্টুমি খুনসুটির প্রত্যেকটা মুহূর্ত।তারপর সুভাষ কলকাতায় একটা চাকরিও করছিল কিন্তু ভালো পোস্ট আর পজিশনের জন্য এম.বি.এ করতে  দিল্লীতে চলে গেল। প্রায় এক বছর হতে চলল সুভাষ দিল্লীতে। প্রথম প্রথম দিনে চার পাঁচবার ফোনে কথা হত তারপর সেই সংখ্যাটা কমে দাঁড়ায় দিনে দুবার এখন কথা শুধু হোয়াটসঅ্যাপে।কনকের মাঝে মধ্যে মনে হয় কি এমন ব্যস্ততা পরমুহূর্তে মনে হয় পড়াশোনা করতে গেছে কত রকম সমস্যা আছে হয়ত না না ভাবে সময় বের করতে পারে না। 
     






 এদিকে একদিন মাসি ফোন করে বলল ..."কনক আমি বাড়ি শিফট করছি তুই এলে ভালো হত। "কনক আবার ঘরের কাজে খুবই পটু। বিশেষ করে জিনিস পত্র আনপ্যাক করে তা সুন্দর ভাবে গোছাতে কনকের জুড়ি মেলা ভার। তাই মাসির কথা মত চলে গেল নতুন ফ্ল্যাটে। ওখানে গিয়ে দেখে সব প্যাক করা মালপত্র ফ্ল্যাটের করিডোরে রাখা। সিঁড়ি বেয়ে কুলি লড়ি থেকে জিনিস পত্র বয়ে আনছে।এর মধ্যে একটা ছেলে এক পাঁজা বই ওর হাতে ধরিয়ে ..."ধর....ধর"বলে চলে গেল। কোনও মতে বইগুলো আগলে এক কোণে দাঁড়িয়ে কনক। প্রচন্ড ওজন কি করে। ছেলেটি ঘরের ভিতর থেকে বাইরে এসে বলল ..."এ কি দাঁড়িয়ে রইলে যে ভিতরে এস। "নিজের মাসির বাড়িতেই কেমন যেন অচেনা পরিবেশ লাগল ওর। ঘরে ঢুকেই একটা পিজবোর্ডের  বাক্সের উপর বই গুলো রাখল। মাসি বলল ..."কনক এই দেখে আমার মেজ ননদের ছেলে ঋষি। "ছেলেটা বলল ..."আমাদের আগেও দেখা হয়েছে। "কনক ভ্রূ কুঁচকে বলে..."কোথায়?"মাসিও অবাক। সকলের রহস্য ভেদ করে ঋষি বলে..."কেন টুবলুর অন্নপ্রাশনে ওকে দেখেছিলাম। "মাসি তো হেসে গড়ায় ..." তখন তো তোর মাত্র সাত বছর বয়স। "ঋষি লাগাতার সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা করে বেশ ক্লান্ত।চাদরে মোড়া সোফায় গা এলিয়ে বলে..."আমার সব মনে থাকে। "দুপুরে মাসি গরম গরম খিচুড়ি আর অমলেট বানিয়ে খেতে ডাকল ওদের দুজনকে। ঋষি তো খিচুড়ি দেখে নাক সিটকে বলে ..."আমি কিছুতেই খাব না এ জিনিসটা আমার একদম সহ্য হয় না। "মহা বিপদে পড়ে মাসি। মাসি জানত ঋষি খিচুড়ি খায় না কিন্তু ঝামেলার মাঝে তাই করেছিল কনক বলল ..."তাহলে আজ উপোস কর। "
..."ভারি নিষ্ঠুর তো তুমি?"কোমরে হাত দিয়ে ওর সামনে এসে  বললো ঋষি।
..."কোনও উপায় নেই নয়।এই খিচুড়ি খাও না হলে উপোস।"বেচারা আর ঝামেলায় গেল না। অনিচ্ছা সত্তেও বসে পড়ল খেতে।বিকেলে ঋষি চলে যাওয়ার পর মাসি বলল ..."ঋষি ভালো চাকরি করে। তোর ওকে কেমন লাগল। "মাসির ইশারা বুঝতে পেরে কনক একটু ঝামেলায় পড়ে। ও চুপ করে রইল। মাসি বলল ..."আমার খুব ইচ্ছে তোদের বিয়ে হোক।"কনক মাটিতে বসে মোড়ক খুলে শোপিস গুলো শোকেজে সাজাচ্ছিল মাসির কথাটা শুনেই  এক লাফে উঠে দাঁড়ায় ..."ওয়েট... ওয়েট আমি কিন্তু বিয়ের জন্য একদম রেডি নই। "মাসি একটু হকচকিয়ে যায়। বলে ..."এখনই তো বলছি না। তবে ঋষি কিন্তু ভাল ছেলে। দেখতে শুনতেও তো মন্দ নয়। "
..."প্লিজ মাসি। আমি অলরেডি একজনের সঙ্গে রিলেশনে আছি। সেখানে ঋষি যত ভালোই হোক না কেন আমি ভাবতে চাই না। "মাসি চুপ করে গেল। এসব ব্যাপারে মনের ইচ্ছেটাই সব।





     এদিকে ক'দিন ধরে সুভাষের কোনো পাত্তা নেই। ফোন করলে রিং হয়ে যায় ও ফোন ধরে না ।মেসেজ করেও লাভ হয় না। কনক মন মরা হয়ে শুয়ে।ভিতর ভিতর টেনশনও হচ্ছে সুভাষের জন্য।তখনই সুভাষের ফোন। কনক এক লাফে ফোন ধরে বেশ উত্তেজিত গলায় বলে ..."কি আশ্চর্য ফোন ধরছ না কেন? "
..."একটু ব্যস্ত ছিলাম।"ফোনে সুভাষ বললো। 
..."এত ব্যস্ত যে আমার কথা মনে পড়ে না।আমায় মিস কর না তুমি ? "
কথাটা এড়িয়ে গিয়ে সুভাষ অন্য কথা বলতে শুরু করল। কনক ওকে  বিরক্ত  করার জন্য বলল ..."আমার নতুন একজন বন্ধু হয়েছে ওর নাম ঋষি ভীষণ হ্যাণ্ডসাম।আমাকে লাইক করে জানো! "সুভাষের গলার স্বরের বিশেষ পরিবর্তন হল না।ও শুধু বলল ..."ভালোই তো নতুন নতুন বন্ধু তৈরী কর। ঘোর ফের আনন্দ কর জীবন তো একটাই।"এই রকম কিছুই আশা করে নি কনক।ভেবেছিল সুভাষ হয়ত একটু হিংসা করবে বা রাগ দেখাবে কিন্তু ওর তো কোনও হেল দোলই নেই।কনক ভাবল দিল্লিতে গিয়ে সুভাষ বড্ড বেশী আধুনিক হয়েগেছে নিজের গার্লফ্রেণ্ডের প্রতি কোনো পজেসিভনেসই নেই।না কি ও কনককে এতটাই বিশ্বাস করে যে মাঝে সন্দেহ অ
বিশ্বাস কিছুই আসতে দেয় না। ভেবে ভালই লাগল কনকের। 



  বি.এড কলেজে বেশ কিছু দিন হল কনক ভর্তি হয়েছে।রোজ রোজ ক্লাস পড়ার চাপে কদিন ধরে ও ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।একদিন কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার সময় বাসে দেখা হল অনুর সঙ্গে। অনু যেন ওকে দেখে না দেখার মত করে রইল। কনক ওর পিঠে চাটি মেরে ডাকে..."কি রে চিনতে পারছিস না। "অনু ঘাবড়ে যায় তার সঙ্গে আরও চমকে ওঠে কনক। অনুর পাশেই দাঁড়িয়ে সুভাষ।ও যেন বিশ্বাসই করতে পারে না ।সুভাষ এখানে কি করে এল এর তো দিল্লিতে থাকার কথা। এখানে বাসে আবার অনুর সঙ্গে। ভাবনা চিন্তা গুলো তালগোল পাকিয়ে গেল।ওরা দুজনে একে অপরের হাত ধরে ওরই সামনে দিয়ে চলে গেল। কনক অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল।যেন কোনো এক দুঃস্বপ্নে রয়েছে ও। বাস থেকে যখন নামল তখন প্রায় সন্ধে। রাস্তায় স্ট্রীট লাইট জ্বলে গেছে আকাশে আবছা আলো দেখা যাচ্ছে কিন্তু ও যেন চারিদিক অন্ধকার দেখছে নিজের চোখকেই তো বিশ্বাস হচ্ছে না।মাথা ঘুরছে ।পা দুটো টলছে সেই সময় একটা বাইক ওর গা ঘেসে   বেরিয়ে যেতে একটা অপরিচিত হাত এক ঝটকায় টেনে আনল ওকে অচৈতন্য মনটা শরীরের ঝাঁকুনিতে সচেতন হল। দেখে ঋষি ওর হাতটা শক্ত করে ধরে ও ধমকের সুরে বললো ..."সন্ধের পর থেকে চোখে দেখ না। "কনক ওর কোনও কথারই উত্তর দিতে পারল না কেমন যেন ওর  দম বন্ধ হয়ে আসছে গা গুলিয়ে উঠছে  শুধু বলল ..."আমার শরীরটা ভালো লাগছে না। "ঋষি বোধ হয় কিছু একটা বুঝল ওর চোখ মুখ দেখে।বেশী কথা না বাড়িয়ে ওকে বাড়ি পৌছে দিল। সারা রাত চোখে ঐ দৃশ্যটা ওকে এতটুকুও ঘুমতে দিল না চোখ বুজলেই খালি দেখছে অনুর হাত ধরে সুভাষ বাস থেকে নেমে গেল।ওকে দেখেও দেখল না এমন কি কোনো রকম প্রতিক্রিয়াও দেখাল না। ওরা কবে থেকে ওকে অন্ধকারে রেখেছে কিছুই টের পায় নি কনক। দিনের পর দিন ওর প্রিয় বন্ধু আর ওর প্রমিক ওকেই আড়াল করে দুজনে দুজনের মাঝে রিলেশন তৈরি করে নিয়েছে। এমন নির্দয়তার সঙ্গে বিশ্বাস ভাঙতে মনে গভীর আঘাত পায় কনক। আত্মবিশ্বাস হারায়।এমনকি হারায় ব্যবহারের স্বাভাবিকতা সব সময় চুপচাপ। কথা না বলে একা বসে থাকা। বাড়ির লোক ব্যাপারটা ভাল ঠেকছে না দেখে সাইক্রিয়াটিস্টের সাহায্য নেয়। সেখানে ডক্টর বলেন কনক ডিপ্রেসনে ভুগছে ।মনের আত্মবল ফেরাতে  জীবনের স্বাভাবিকতা আনতে ়সাইক্রিয়াটিস্টের কাছে কাউনসিলিং করে যেতে হল বেশ কিছুদিন ধরে।  নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড আর প্রেমিকের কাছ থেকে পাওয়া এমন অপ্রত্যাশিত আঘাতে স্বাভাবিক ভাবে দিন গুলো কাটাতে ব্যর্থ হয়ে পড়েছিল কনক।মন থেকে এতটাই ভেঙে পড়েছিল যে ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করতে হল।একরকম লড়াই করতে হল নিজের শরীরের মনের ভাব আবেগ গুলোর সঙ্গে।এমনকি বি.এড কোর্সটাও  বন্ধ হয়ে গেল মাঝ পথে কেমন যেন হঠাৎই বদলে গেল কনকের জীবন।
            




বাড়ির লোকের সমর্থনে আর অনেক দিনের কাউনসেলিংএ  ধীরে ধীরে স্বভাবিক হয়ে উঠল কনক। একদিন স্নান সেরে জানলার সামনে বসে রোদে চুল শুকচ্ছিল তখনই মাসির ফোন করল। মাসি বললো ..."ঋষির বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে ।অনেক দিন পর একটা শুভ অনুষ্ঠান পাব। সবাই মিলে খুব আনন্দ করব।দেখবি কত মজা হবে। তুই কিন্তু শিফন জর্জেট পরবি সকলের সঙ্গে মিশলে দেখবি মন ভালো হয়ে যাবে।এই বিয়ে বাড়িটা দরকার ছিল। সবার সঙ্গে দেখা সাক্ষাত হবে কথা বলবি।খুব আনন্দ হবে দেখিস" মাসি বুঝিয়ে গেল না না ভাবে। এই বিয়ে বাড়িটা না কি ওর মেডিসিনের কাজ করবে। কনক শুনল চুপচাপ। একবার মনে এল এই ঋষির সঙ্গে বিয়ের কথা হয়েছিল ওর। তখন লাফিয়ে উঠেছিল।তখন সব ভরসা ছিল সুভাষ। সুভাষের কথা মনে আসতেই নিজেকে সামলে নিল। কনক যাবে ঋষির বিয়েতে। আনন্দ করবে। ও তো ঋষির প্রতি কোনও দিনও আকৃষ্ট হয় নি তবে কেন যাবে না আর যাকে ভালোবেসে ছিল বর্তমানে তার প্রতি কোনও অনুভূতিই আর জীবিত নেই।
       





     ঋষির বিয়েতে কনক সুন্দর ভাবে সেজে গুজে পুরনো সব যন্ত্রণা পিছনে ফেলে আনন্দে ভাসল।ওকে দেখে ঘোষাল পরিবারের পছন্দ হয়ে গেল।বিয়ের প্রস্তাব এল ঘোষাল পরিবারের তরফ থেকে। কনকের পরিবারও আপত্তি করল না ।ভাল ফ্যামিলি বাড়ির বড় ছেলে মানসের রোজগার ভাল দেখতে শুনতে ভাল তবে আর আপত্তির জায়গা কোথায়। বাড়ির লোকের উপর পুরো আস্থা রেখে কনকও রাজি হয়ে গেল বিয়েতে। অতীতের ক্ষত সারিয়ে সমস্ত মলিন স্মৃতি ভুলে  কনক নতুন জীবনে পা ফেলেল। 




       বিয়ের পর থেকেই কনক দেখেছে মানস ওকে সব বিষয়ে গুরুত্ব দেয়। কোনো কাজ কনকের সঙ্গে আলোচনা না করে করে না। ওর ছোট বেলার সব কাণ্ডকারখানা এমন কি প্রথম ক্রাশ কলেজের বিফল প্রেম সব বলেছে ওকে। মানস বড্ড খোলামেলা কোনো কথা লুকতে জানে না। কনক ভাবে তবে ওই বা কেন সব খুলে বলবে না মানসকে।তারপর ভয়ও পেয়েছে সব শুনে যদি উল্টো প্রতিক্রিয়া হয় কিন্তু মানসের সঙ্গে কথায় কথায় কনক একদিন সব বলে ফেলে।বলে হালকাও লাগে। অন্য কারো কাছ থেকে এত ঘটনা জানার চাইতে কনকের কাছে জানাটাই ঠিক বলে মনে হল কনকের। ধীর স্থির স্বভাবের পরিণত মনস্কের মানস সব শুনল শান্ত মনে তারপর বলল..."এখন তুমি আমার কনক, তোমাকে সব ঝড় ঝাপটা থেকে আগলে রাখার দায়িত্বটাও আমার।"মানসের কথা গুলো যেন ওর তৃষ্ণার্ত হৃদয়ে প্রেমের বারি বর্ষণ করল। নিজেকে নতুন করে খুঁজে পেল কনক। 




এদিকে মানসের ছোট ভাই আবার বৌদি ভক্ত।দুই ভাই পিঠো পিঠি এবার দেওরের পাত্রী নির্বাচনের পালা।এক পাত্রীর সন্ধান এনেছেন শ্বশুর মশাই। সবাই বলল আগে মানস আর কনক দেখে আসুক তারপর বাড়ির বড়রা দেখবে। সকলের কথায় ওরা দুজন পাত্রী দেখতে হাজির হল।কিন্তু পাত্রী দেখে কনকের চক্ষু চড়ক গাছ। এ পাত্রী আর কেউ নয় ওর বিশ্বাস ভাঙার পাত্রী অনু। কথাবার্তার মাঝে কনক বলল ..."আমি অনুর সঙ্গে একটু কথা বলতে চাই। "সকলে ব্যাস্ত হয়ে অনুর সঙ্গে কনকের নিভৃতে সাক্ষতের ব্যবস্থা করল। কনক অনুর চোখের দিকে তাকিয়ে বলল ..."কেন ?"অনু ওর চোখের দিকে তাকাতে পারল না কেঁদে ফেলল ..."আমায় মাফ কর আমি জানি আমি কতটা নীচে নেমে গিয়েছিলাম কিন্তু সুভাষের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা টেকে নি ও আরেক জনের সঙ্গে রিলেশনে ... ঠিক যেমন তোর সঙ্গে ..."কনক বলল ..."আমায় ঈশ্বর বাঁচিয়েছেন তাই আমি মানসকে পেয়েছি কিন্তু তুই তো ব্যক স্ট্যাবার অনু তুই একটা মেয়ে হয়ে আমার মনের সঙ্গে খেলে আমার পিঠে ছুড়ি মারলি কি করে তোকে আমি কোনও দিনই  বিশ্বাস করতে পারব না।" অনু কথার উত্তর দিতে পারল না। মনসের সঙ্গে ওদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এল কনক।মানস বললো কি গো পছন্দ হল? হাসল কনক আজ ওর হ্যা না এর উপর অনুর এবাড়িতে প্রবেশ নির্ভর করছে যে নাকি একদিন ওকে ওরই জীবনে অসহায় করে দিয়েছিল। কনক মাথা নাড়ল ..."উহু। একে পছন্দ করা মানে সব জেনে বিপদ ডাকা! "মানস ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে চেয়ে রইল। কনক বললো ..."বিশ্বাস ঘাতক কে মাফ করা বোকামি!"
..."মানে এই কি সেই! "চোখ বড় করে মাথা এক পাশে হেলিয়ে সঙ্গতি প্রকাশ করল কনক। দুজন হাঁটা ধরল পাশাপাশি। কনকের বড্ড ভাল লাগছে। ভাল লাগছে মানসকে পাশে পেয়ে।ভাল লাগছে আজকের দিনটা।মনে অনু সুভাষের প্রতি কোনো ক্ষোভ ছিল না ঠিকই তবে আজকের ঘটনাটায় মনে হচ্ছিল লড়াই করে ঘুরে দাঁডাতে পারলে একটা সুযোগ ঠিক আসে। সুযোগ আসে নিজেকে প্রমাণ করার নিজের সততার মূল্য পাওয়ার।©Pryamboda priya

অনুভূতির আসর-Anuvutir asor ফেসবুক পেজে আরো গল্প রইল 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন