Translate

শনিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৮

মন*


#মন(রিপোস্ট)
#রচনায়#রিমা_বিশ্বাস(প্রিয়ম্বদাপ্রিয়া)
         চন্দনার মা বাবা ঘরে বসে আলোচনা করছেন চন্দনা সব শুনছে।ওরও মনটা ভালো নেই।কানের দুল বালা খুললে।  চুলের ক্লিপ গুলো একটা একটা করে খুলে রেখে দিল কাটা-ক্লীপের বাক্সে।মা একটা শ্বাস ছেড়ে বাবাকে বলল ..."যাদের চোখ নেই তারা আমার চন্দনাকে চিনতে পারবে না।তাদের কাছে ও সুন্দরী নয় কিন্তু আমার চন্দনার মতন মন কোথায় পাবে লোকে।এমন ঘরোয়া মেয়ে আজকাল দেখা যায়।"বাবা চুপ করে বসে শুনছে।





        বাবা মায়ের বড় চিন্তা চন্দনাকে নিয়ে।গ্র্যাজুয়েশনের পর থেকেই ওর বিয়ের চেষ্টা চলছে কিন্তু লালিমা লালিত্যহীন চন্দনাকে যারাই দেখতে এসেছে তারাই খারিজ করে চলে গেছে।সাধারণ স্নাতক মেয়েটাকে সুপাত্রস্থ করার চিন্তায় বাবার প্রায়দিনই রাতে ঘুম হয় না।আজও একদল পাত্র পক্ষ এসেছিল তারা পরিষ্কার না করেই চলেগেছে।ক্রমাগত প্রত্যাখ্যানে চন্দনার আত্মবিশ্বাসেরও অভাব ঘটছে।ও এক এক সময় ভাবে ভগবান যদি রূপের দিকে আমায় উদার হস্তে আশীর্বাদ করত তবে রোজ রোজ এমন পরীক্ষায় বসতে হত না। যার ফল পূর্ব নির্ধারিত।





        একদিন সকালে মা বলল দক্ষিণেশ্বর কালি মন্দিরে পুজো দিতে যাবে।চন্দনাও মায়ের সঙ্গে সকাল সকাল স্নান সেরে তৈরী হয়ে নিল।মায়ের বড় আদরের চন্দনা।এত বাধ্যের মেয়ে মা যা বলে ও তাই করে এখনও সেই ছোট্ট বেলার মতন চন্দনা বড়দের সব সময় মেনে চলে।তাই ওর চোখে জল দেখলে মায়ের বুকের ভিতরটা জ্বলে যায়।মন্দিরে গিয়েও চন্দনার জন্য এক মনে প্রার্থনা করে গেল মা।যেন চন্দনার কদর করে মানুষ ।শুধু রূপ দেখে খারিজ করে চলে না যায়।





        পুজো দিয়ে বেরতে ওরা খেয়াল করে মন্দির চত্বরের এক জায়গায় বেশ ভিড়। চন্দনা  সেই ভিড়ের মধ্যে ঢুকে দেখে একজন বয়স্ক মহিলা মাটিতে বসে তার সঙ্গে একটি অল্প বয়সী মেয়ে।ভদ্রমহিলার শাড়ি কাপড় চেহারার গড়ন দেখে মনে হচ্ছে অবস্থানপন্ন বাড়ির মহিলা।চন্দনা এগিয়ে গিয়ে জিগ্যেস করল ..."কি হয়েছে? "অল্প বয়সী মেয়েটি ভয়ে ভয়ে বলে..."দিদাকে নিয়ে পুজো দিতে এসেছিলুম ভিড়ের মধ্যে ধাক্কা খেয়ে টাল সামলাতে না পেরে পড়ে গেছেন।আমিও ভয় পেয়ে গেছি। "বলে সেই মেয়েটি চন্দনাকে তার মোবাইলটা দেখিয়ে বলল..."ফোনটাও পড়ে ভেঙে গেছে এবার কি করব বলুন তো দিদি।আমি ওনার আয়া বাড়িতে সবাই ব্যস্ত আমার ভরসায় পাঠিয়েছে।উনি তো উঠতে পারছেন না পা মনে হয় মোচকে গেছে।"চন্দনা বলল..."আপনারা এলেন কি ভাবে?"মেয়েটি বলে..."গাড়িতে এসেছি কিন্তু দিদাকে ছেড়ে তো সাহস করে  ড্রাইভারের কাছে যেতেও পারছি না।"চন্দনা ওদের আশ্বস্ত করে বলল ..."আমি ব্যবস্থা করছি।"চন্দনা মন্দিরের অফিসে কথা বলে একটা হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে।দু জন মন্দিরের কর্মীর সাহায্যে বৃদ্ধাকে দক্ষিণেশ্বর কালি বাড়ির মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে পার্কিং এরিয়ায় নিয়ে এসে ওনার গাড়িতে উঠিয়ে দিল।মন্দিরের তরফ থেকে তাকে নুন্যতম চিকিৎসা প্রদানও করা হল।চন্দনা আবার তাড়া তাড়ি একটা দোকান থেকে জলের বোতল কিনে মেয়েটির হাতে ধরিয়ে দিল।এত অল্প সময়ে চন্দনার আগমনে ওদের মুশকিলের দ্রুত সমাধান হয়ে যাওয়ায় বৃদ্ধা ওর প্রতি প্রভাবিত হলেন।উনি গাড়িতে উঠে চন্দনার গালে হাত দিয়ে বললেন ..."আজকাল ব্যস্ততার যুগে কেউ কারও জন্য সময় নষ্ট করে না তুমি এত অল্প বয়সী একটি মেয়ে তোমার জন্য আজ আমি অনেক ঝামেলা থেকে রেহাই পেলাম।তোমার সঙ্গে আরেকদিন আলাপ করতেই হবে।"উনি ওনার ড্রাইভারকে বললেন ..."এই দিদির ফোন নাম্বার রেখে দাও।"চন্দনা হাসি মুখে বলল ..."আপনার সঙ্গে আলাপ পরিচয় করার আমারও ইচ্ছ রইল।"





            সেদিনের ঘটনার পর বৃদ্ধা তার আয়ার সঙ্গে প্রায়সই চন্দনাদের বাড়িতে আসে।চন্দনার মাও বৃদ্ধা মনিকুন্তলাকে খুব আদর যত্ন করেন।বিকেলে চন্দনা টিউশন পড়াতে গেছে সেই সময় মনিকুন্তলা ওদের বাড়িতে।চন্দনার মা আবার ওনার পছন্দের রাঙা আলুর পান্তুয়া বানিয়ে প্লেটে সাজিয়ে দিলেন।না না কথায় প্রসঙ্গে মনিকুন্তলা বললেন ..."চন্দনার জন্য পাত্র দেখছ না।"মা বলল ..."এটাই তো আমার একমাত্র স্বপ্ন মেয়েটাকে সৎপাত্রস্থ করব।"মনিকুন্তলা বলেন..."তোমার মেয়েটাকে আমায় দিয়ে দাও।ও বড় ভালো মানুষ এখনকার দিনে এমন মেয়ে খুব কম দেখা যায়। বড়দের এতটা সম্মান করে চলে।"মনিকুন্তলার প্রস্তাবে আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে চন্দনার মা।এটাই  তো ওদের একমাত্র চিন্তা।বাড়িতে সকলেই খুব খুশি।প্রথম কেউ চন্দনার রূপের সমালোচনা না করে ওর সহানুভূতি প্রবণ মনের, পরোপকারী মানসিকতার প্রশংসা করে ওকে স্বেচ্ছায় ঘরের বৌএর মর্যাদা দিতে চাইছে।সেই দিনটা নিজেকে খুবই বিশেষ মনে হল চন্দনারও।সারা রাত মনিকুন্তলারর নাতি অভিমন্যুর কথা ভাবল।কেউ ওর জীবনে আসতে চলছে। চন্দনাও ভালোবাসা পেতে পারে আর পাঁচটা মেয়ের মতন ওরও স্বপ্ন দেখার অধিকার আছে। নিয়তি ওর ভাগ্যেও প্রেম লিখছে।





      রবিবার অভিমন্যুর বাড়িতে আসার কথা। পুরো সপ্তাহটাই উত্তেজনায় কাটিয়েছে মেয়েটা।রবিবার সকালে অভিমন্যু ওদের বাড়িতে এল।চন্দনাও মনে অনেক আশা অনেক আবেগ নিয়ে অভিমন্যুর সামনে এসে বসল।অভিমন্যু সুদর্শন। লম্বা চওড়া চেহারা গায়ের রঙ ফর্সা।জীবনে প্রতিষ্ঠিত।চন্দনাকে দেখে ওর মুখের অভিব্যক্তিতে চন্দনার বুকের ভিতরে একটা অদৃশ্য তীর বিদ্ধ হল।অভিমন্যু বিশেষ কিছু কথাও বলল না তবে চন্দনার বুঝতে অসুবিধে হল না যে ও অভিমন্যুর প্রত্যাশার চেয়ে অনেকটা নিচে তাই এই সম্বন্ধে অভিমন্যু মোটেও আগ্রহী নয়।চন্দনাও শক্ত হয়ে গেল ধীরে ধীরে।
       




      বেশ কিছুদিন পর মনিকুন্তলা ওদের বাড়িতে এসে অপরাধীর মতন বললেন ..."আমার নাতির জন্য তোমারা কি আমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে না।"চন্দনা হাসি মুখে মনিকুন্তলাকে জড়িয়ে ধরে। বলে..."আমার ঠাকুমা দিদা দুজনেই অনেক ছোট্ট বেলায় আমায় ছেড়ে চলে গেছেন।তোমাকে পেয়ে আমি কিছুতেই হারাতে রাজি নই।"মনিকুন্তলা বয়সের ভারে সব সময় আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না উনি কেঁদে ফেললেন।বললেন ..."আমাদের বাড়ি মাঝে মধ্যে যাবি তো।আমার তো বয়স হচ্ছে কে জানি কতদিন তোদের বাড়িতে আসতে পারব।"মনিকুন্তলার দু গাল টিপে চনন্দনা বললো ..."কে বললো বয়স হচ্ছে তুমি তো এখন যুবতী। আমার কিউটি পাই.. "মনিকুন্তলা হাসে ..."তুই রাগ করিসনি বল! "
..."দ্যাৎ! আমার রাগ করতে বয়ে গেছে। বুড়ি থুড়ি বললে কিন্তু রাগব বলে দিলাম।"বলে আবার মনিকুন্তলার গাল ধরে টানল।






      এক বিকেলে চন্দনা টিউশন পড়িয়ে বাড়ি ফিরছে তখন ওকে দেখতে পেয়ে গাড়ি থামিয়ে মনিকুন্তলা ডাকলেন। বললেন..."আয় গাড়িতে ওঠ মা, তোকে বাড়ি পৌছে দি।"চন্দনার সঙ্গে ওনার সম্পর্কটা খুবই ঘনিষ্ঠ।চন্দনা কোনও দ্বিধা না করে গাড়িতে উঠে পড়ে।গাড়িতে উঠে দেখে এক অপরিচিত যুবক বসে।একটু অস্বস্তিতে পড়ে চন্দনা।মনিকুন্তলা সেই যুবককে দেখিয়ে চন্দনাকে বলল ..."ও বিবেক,আমার মেয়ের ঘরে নাতি।মুম্বাইতে বাড়ি।"চন্দনা মৃদু হাসল। গাড়ি চলছে সঙ্গে চলছে মনিকুন্তলার মুখে চন্দনার গুণগান।উনি সমানে বিবেকের কাছে চন্দনার প্রশংসা করে চলেছেন ..."খুব ভালো মেয়ে। কি শান্ত।আমাকে কত ভালোবাসে।"চন্দনার ভারি অস্বস্তি হয়। ভাবে দিদা একবার এই নাতি আরেকবার ঐ নাতির হাতে পায়ে ধরতে শুরু করেছে ওকে বিয়ে করার জন্য।কিন্তু এতে যে চন্দনার নিজেকে অপমানিত মনে হয় তা দিদাকে কে বোঝায়।ওর মোটেও এই গুলো ভালো লাগে না। কিছু বলতেও পারছে না। ও চুপ করে গাড়ির জানলার দিকে মুখ করে বসে রইল।বিবেক বলল ..."ও তো কোনও কথাই বলে না।তার মানে যারা কম কথা বলে তোমার তাদের ভালো লাগে। আমি বেশী বকি তাই তুমি দিনরাত এত গালি গালাজ কর।"মনিকুন্তলা বলে ..."দেখ চন্দনা দেখ কেমন পাজি ছেলে আমি নাকি ওকে গালি দি।"বিবেক বেশ মিশুকে ও খোশ মেজাজের ছেলে ও বলল ..."চন্দনা তো পাখির নাম হয় তোমার মা বাবার বুঝি ভীষণ পাখির শখ।"চন্দনা রেগে যায়। বলে ..."মোটেও না"বিবেক  হাসে ..."দিদু তুমি যে বললে ও খুব শান্ত তবে রাগছে কেন? "মনিকুন্তলা কোনও রকমে সামাল দেয় ..."এই জন্য তোকে বকি পাজি ছেলে।"চন্দনা গাড়ি থেকে নামতে মনিকুন্তলা বললেন ..."কাল বাড়িতে পুজো আছে। পূর্ণিমার সত্যনারায়ণ ব্রত রেখেছি আসিস কিন্তু। "বিবেকও একবার বলল ..."চন্দনা পাখি এলেই খাঁচায় বন্দি করব।দেখি তুমি কেমন সাহস করে আস।"মনিকুন্তলা গুম গুম করে দু ঘা দিল বিবেকের পিঠে..."আবার ফাজলামি!"




      পুজোর দিন বাড়িতে সবাই না না ভাবে ব্যস্ত।যজ্ঞের আয়োজন হয়েছে। চন্দনাও হাজির হল। বিবেক ওকে দেখেই ওর পিছনে লাগতে শুরু করল ..."আজ আর বাড়ি যেতে দেব না ঠিক খাঁচায় ভরব।"চন্দনা ওকে বিন্দুমাত্র পাত্তা না দিয়ে দিদার পাশে গিয়ে বসল।পুরোহিত মশাই জোরে জোরে মন্ত্র উচ্চারণ করে চলেছেন।বিবেক একটা গাঁদা ফুল  ছিড়ে চন্দনার দিকে ছুড়তে লাগল। চন্দনা একবার পেছন ফিরে দেখে বিবেক হাতে গাঁদা ফুল নিয়ে ওর দিকে ছুড়তে যাবে কিন্তু ওর সঙ্গে চোখা চোখি হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে মুখটা ঘুরিয়ে নিল। প্রসাদ বিতরণের সময় বাড়ির বৌরা সিন্নি ফল সাজিয়ে সবাইকে দিচ্ছে চন্দনাকে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিবেক ওর হাত থেকে কাগজের থালাটা নিয়ে বলল ..."পাখিরা এত কিছু খেতে পারে না।"মনিকুন্তলা ব্যস্ত হয়ে ছুটে আসেন। ওনার মনেও ভয় পাছে চন্দনা রুষ্ট না হয়। মনিকুন্তলা বলে ..."বিবেক কেন তুই ওকে এত জ্বালাতন করছিস।আমি সকাল থেকে খেয়াল করে চলেছি।"বিবেক বলল ..."আমার ওকে খুব ভালো লেগেছে।দিদু ও আমার সঙ্গে কথা বলছে না তাই আমার ওকে বিরক্ত করতে বেশ লাগছে। "মনিকুন্তলা কপাল চাপড়ায়..."তুই কবে বড় হবি বিবেক।চাকরি করছিস ক'দিন পর বিয়ে হবে এখনও ছেলে মানুষী যাচ্ছে না। "বিবেক মনিকুন্তলার মুখের কথাটা ছিনিয়ে বলল ..."বিয়ে দিলে তো হবে।"বলে চন্দনার দিকে ইশারা করে বলল ..."ওর সঙ্গে বিয়ে দেবে।"চন্দনার সঙ্গে সঙ্গে চোখ মুখ লাল হয়ে যায় কেমন যেন অপমানিত মনে হয়।ও ভাবে হয়ত অভিমন্যুর কাছে বিবেক ওদের কথাটা শুনেছে তাই নেহাত মনোরঞ্জনের জন্য ওর সঙ্গে মসকরা করে চলেছে।চন্দনার চোখে জল চলে আসে ও সঙ্গে সঙ্গে ওদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।বিবেক ওর পিছন পিছন ছোটে কিন্তু চন্দনা কোনও কথা না বলে চলে যায় দ্রুত পায়ে।




       সকালে চন্দনা ওর বাগানে পায়চারি করছিল। তখন দেখে  বিবেক ঢুকল ওদের বাগানে।চন্দনা একটু বিরক্ত হয়েই ওকে বলে..."কালকের জন্য সরি বলার দরকার নেই।আমার তোমার সঙ্গে কথা বলার কোনও ইচ্ছে নেই।"বিবেক বলে ..."তোমার ইচ্ছে না থাক আমার আছে।প্রথমত আমি সরি বলতে আসিনি।আমি বরা বর খোলা মেলা স্বভাবের মানুষ আমার তোমাকে ভালো লেগেছে তাই বলেছি।তোমাকে বিয়ে করার কথাও বলেছি এতে আমার মনে হয় না আমার সরি বলার প্রয়োজন আছে। আমাকে  তোমার ভালো লাগতে নাও পারে সেটা তোমার ব্যাপার।তাও একবার কারণটা জানতে চাইব।"চন্দনা চোখ মুখ কুঁচকে বলে ..."তোমার আমাকে পছন্দ... তুমি বলবে আর আমি বিশ্বাস করব। কি করে পছন্দ করলে?আমার না রূপ আছে না আছে কোনো গুণ। আমি নিত্যান্ত সাদা মাটা একটা মেয়ে।তাকে দেখে তোমার এতটাই পছন্দ হল যে তুমি তাকে বিয়ে করতে চাইছ।"বিবেক বলল..."মিথ্যে কথা বলব না। মুম্বাইতে কলেজ জীবন থেকে অনেক সুন্দরী দেখেছি। অনেক প্রেম দেখেছি। সব দু দিনের।আজকে এক জনের সঙ্গে কাল আরেক জনের সঙ্গে ছেলে মেয়েদের ঘুরতে দেখেছি।বড় অরুচি ধরে গেছে সুন্দর মুখে।তোমার সাদা মাটা চাকচিক্য বিহীন চেহারার পিছনে তোমার সরল সোজা মনটা আমি প্রথম দিনই দেখতে পেয়েছি।তাই তোমার মনটাকে হাত ছাড়া করতে চাইনি।হয়ত একটু বেশীই তাড়া হুড়ো করে ফেলেছি। কি করব সামনের সপ্তাহে মুম্বাই ফিরতে হবে যে। এখন জীবনে একজন পরিণত মনস্কের সরল মনের জীবন সঙ্গী খুঁজছিলাম তোমাকে দেখেই মন বলল আমার সন্ধান শেষ হয়েছে।"ওর কথায় চন্দনার মেজাজ ঠাণ্ডা হল।ও চুপ করে রইল।বিবেক তো চুপ করে থাকার ছেলে নয়।বলে ..."কি হল তুমি কি শুধু রাগ করতেই জান নাকি। মাঝে মধ্যে কি কথা বলা যায় না। না তোমার আমাকে একেবারেই ভালো লাগছে না।অ্যাঁ কি গো বলবে না!" ওর  কথার ভঙ্গীতে হেসে ফেলে চন্দনা।বলে..."আমার রূপের জন্য আমি যে জীবনে রিজেক্টই হয়েছি। তাই তুমি অমন ভাবে বলায়  কেমন যেন অপমানিত লাগছিল নিজেকে।"বিবেক মুচকি হাসল।বললো ..."ঈশ্বর তোমায় রূপে কার্পণ্য করলেও ভালোবাসার ভাগ্যটা  ভালোই দিয়েছে।"চন্দনা জিগ্যাসু চোখে তাকায়।বলে ..."কি রকম? "
 ..."কেউ কারো রূপে  তার প্রেমে পড়লে তা কত খানি ভালোবাসা হয় তা আমি জানি না কিন্তু আমার শুধু তোমার মনটাকেই ভালোলেগেছে।দিদার কাছে তোমার সব গল্প শুনেছি।"বলে বিবেক চন্দনার মুখের কাছে ঝুঁকে হাসি হাসি মুখে তাকাল..."ট্রাস্ট মি! আমি অভিনয় জানি না।চন্দনা বলল ..."কিন্তু একটা ব্যাপারে আমার ঘোরতর আপত্তি।"বিবেক বলে ..."কোন ব্যাপারে? "
..."ভুলেও আমাকে চন্দনা পাখি ডাকবে না। "চন্দনার কথায় বিবেক খুব হাসে। ওর হাসি দেখে চন্দনার মুখেও হাসি ফুটে ওঠে।দুজনকে প্রাণ খুলে হাসতে দেখে ঘরে জানলার সামনে দাঁড়িয়ে মায়ের চোখে জল চলে আসে।এটাই চাইতেন উনি মনে প্রাণে ।তবে কি আজ হল তার সব অপেক্ষাকার অন্ত।
©Pryamboda priya
অনুভূতির আসর-Anuvutir asor ফেসবুক পেজ 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন